ইসলামে দাবা হারাম করার রহস্য।

photo: collected 

ইসলামে দাবা খেলা সম্পূর্ণরূপে হারাম। যদিও এটি একটি বুদ্ধির খেলা। তারপরও এই খেলাটি ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আমরা সবাই অবগত যে ইসলাম ধর্মে সকল প্রকার মূর্তি হারাম করেছেন আল্লাহ সুবহান আল্লাহ্ তা'য়ালা। কিন্তু দাবার প্রায় সব গুটিই কোনো না কোনো মূর্তির রূপে তৈরি। এজন্যই মূলত দাবাকে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে।
কারন এমন যেকোনো কাজ যা আল্লাহর সৃষ্টিকে আল্লাহর স্মরণ থেকে বিরত রাখে তাই হারাম।

মুসাদ্দাদ (র)…. বুরায়দাহ (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেনঃ নবী করীম (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শতরঞ্চ বা দাবা খেলে, সে যেন তার হাতকে শূকরের গোশত ও রক্তের মধ্যে প্রবেশ করায় । [সহীহ মুসলিম শরীফ , ৫ম খন্ড , ৪২ তম পর্ব , ১ম অধ্যায় , হাদীস নং- ১০/২২৬০]
দাবা হচ্ছে একটি নেশার খেলা। আর সকল ধরনেই নেশাই হারাম। এখানে অনেক সময় পার হয় কিন্তু খেলা শেষ হয় না। শয়তান নিজে এসে মানুষের মধ্যে নেশা ও বাজির সৃষ্টি করে দেয়।  যার ফলশ্রুতিতে মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায়। নামাজ থেকে বিরত থাকে। মানুষের মধ্যে শত্রুটা তৈরি হয়। অর্থাৎ দাবা বুদ্ধির খেলা হলেও বিশৃঙ্খলা তৈরি করে বেশি।তাই এমন কোন খেলা যা তুচ্ছ জিনিসকে বড় করে তুলে এবং আল্লহর থেকে বান্দাদের দুরে সরিয়ে রাখে তা মদ খাওয়ার মতই হারাম।
আবু মুসা আল আশারি (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুল (সাঃ) বলেন,“যে পাশা/দাবা খেলল সে যেন আল্লাহ্ এবং আমাকে অমান্য করল”।
(আবু-দাউদঃ৪১২৯)

একদিন দু’জন আনছার ছাহাবী তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত হয়ে বললেন, কি ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক বস্তু যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই অনর্থক (ﻟَﻬْﻮ ) ... (নাসাঈ, হা/৩১৫)। 
এতে বুঝা যায় যে,যেকোন বৈধ খেলা ও যদি আল্লাহকে ভুলিয়ে দেয়, তবে সেটাও হারাম হয়ে যাবে।

আবু মুসা আল আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি দাবা ( সতরঞ্জি) খেললো সে আল্লাহ্ ও তার রাসূলের নাফরমানী করলো। [ সুনানে আবু দাউদ , অধ্যায় নং- ৪৩ , অনুচ্ছেদ নং- ৬৪ , হাদীস নং- ৪৯৩৮ ]
ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা (ﻟَﻬْﻮ) বাতিল, যদি তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’।
সুতরাং বুদ্ধির খেলা হলেও দাবা হারাম।
Previous Post Next Post