ইসলামের শ্রেষ্ঠ ৬ নারীর জীবনী যারা জান্নাতী (পর্ব ১)


১. হাযার (আঃ) ইব্রাহীম (আঃ) এর স্ত্রী

উনার জীবনী থেকে আমাদের জন্য শিক্ষা হচ্ছে আল্লার উপর তাওয়াক্কুল করা।

ইব্রাহীম (আঃ) তার স্ত্রী হাযার (আঃ) ও দুধের বাচ্চা ইসমাঈল (আঃ) কে নিয়ে মক্কার মরু জমিনের মাঝখানে রেখে আসলেন। যেখানে কোন মানুষ বা প্রাণী এমনকি খাওয়ার পানি এবং
আকাশে কোন পাখি পর্যন্ত ছিল না।
শুধু সাথে ছিল একটা মাএ পানির মোশক।

কোন কথা না বলে ইব্রাহীম (আঃ) উনার স্ত্রি ও পুত্রকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন।

ঐসময় মুহাযার (আঃ) বল্লেন, “ইব্রাহীম একটু দাড়াও”। আমি কি কোন অপরাধ করেছি?  কোন কথা ছাড়াই আমাকে আল্লার এই বিশাল মরুভূমিতে রেখে যাচ্ছ। সাথে আমাদের দুধের শিশুটি কেউ?  কিভাবে থাকব আমরা দুজন?

হাযার (আঃ) আরও বল্লেন, “সবই না হয় বাদ দিলাম একটা কথার উত্তর চাই, তুমি যে আমাদেরকে রেখে যাচ্ছ এটা কি তোমার ইচ্ছায় নাকি আল্লাহর ইচ্ছায়?
সায়্যাদেনা ইব্রাহীম কোন কথা না বলে শুধুই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বলল, “আল্লাহর ইচ্ছায়”।

এই শুনে হাযার (আঃ) বলল যদি সত্যি আল্লার ইচ্ছায় আমাদেরকে এখানে রেখে যাও তাহলে আমার আল্লার উপর ভরসা আছে। আল্লাহ আমাদের কোন বিপদ দিবেন না এবং কোন কষ্টও দিবেন না। আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট। সুবহানাআল্লাহ।

ঠিকিই আল্লাহ যথেষ্ট হয়েছেন। ওনাকে দিয়েই মক্কা আবাদ হয়েছিল।  মক্কায় কোন মানুষেরই বসবাস ছিল না। কিন্তু আজ মক্কায় জায়গা পাওয়া যায় না। চিন্তা করতে পারেন, যে মক্কায় মানুষ ছিল না সেই মক্কার মসজিদুল হারাম এ জুম্মার দিনে ৫ লক্ষ, ৭লক্ষ বা কখনো কখনো ১০ লক্ষ মানুষের জামাত হয়। যা হয়েছে শুধুমাত্র হাযার (আঃ) এর ঈমানের জন্য। সুবহানাআল্লাহ।

হাযার (আঃ) থেকে গেলেন এই মক্কার মরুভূমিতে। থাকার একদিনের ব্যবধানে মশকের পানি শেষ হয়ে গেল।

কিন্তু আল্লার অশেষ রহমতে হাযার (আঃ) এর পুত্র ঈসমাইল (আঃ) এর পায়ের ধাক্কায় যমযমের পানির উৎপত্তি হয়।

মক্কার সর্বপ্রথম সম্প্রদায়ের নাম হল “যুরহুম”। যারা যমযমের পানির বদলে সায়্যাদাতুনা হাযার (আঃ) এর মুরিদ হয়েছিলেন। এইভাবেই মক্কা এখন কোটি কোটি মানুষের পদচারনায় মুখরিত হয়ে থাকে।
ইসলামের ৬ জন শ্রেষ্ঠ নারীর মধ্যে হাযার (আঃ) এর ঘটনা থেকে আমরা শিখতে পারি কিভাবে বিপদের সময়ও আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করতে হয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি ভরসা ও ধৈর্য কখনোই বিফলে এ যায় না। এর প্রতিদান শুধু অাখিরাতেই নয় বরং এই দুনিয়াতেও পাওয়া যায়। কিন্তু আমরা কয়জন, বিপদের সময় স্থির থাকি? আল্লাহর উপর ভরসা রাখি?

আসুন মুহতারামা হাযার (আঃ) এই ঘটনাটি বেশি বেশি শেয়ার করি যাতে করে অন্য একজন জানতে পারে কিভাবে বিপদের মূহুর্তে ভেঙে না পড়ে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হয়।
ছবিঃ সংগ্রহিত।
Previous Post Next Post